Posts

Showing posts from June, 2017

রমজান, কোরআন এবং আমরা

Image
মুহাম্মদ আবুল হুসাইন  রমজান মাস অন্য মাসের মত নয় রমজান মাস অন্যসব মাসের মত সাধারণ কোন মাস নয়। এটি অত্যন্ত পবিত্র মাস, পূণ্যের মাস। রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের মাস মাহে রমজান। এই পুরো মাসটিই ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে পূর্ণ। এই মাসেই পবিত্র কোরআন মজিদ নাযিল হয়েছে। তাই এই পবিত্র মাসে রোজা বা সিয়াম সাধনাকে আল্লাহ্ রাব্বুল আ’লামীন প্রত্যেক ঈমানদার নরনারীর উপর ফরজ বা বাধ্যতামূলক করেছেন। শুধু আল কোরআনই নয়, অন্যান্য প্রধান প্রধান আসমানি কিতাবও রমজান মাসেই নাযিল হয়েছিল এবং একারণে পূর্ববর্তী উম্মতদের উপরও রমজান মাসে সিয়াম সাধনা বাধ্যতামূলক ছিল। যেমন পবিত্র কোরআন মজিদে আল¬াহ রাব্বুল আ’লামীন স্বয়ং বলেন: ‘হে মু’মিনগণ! তোমাদের তোমাদের জন্য সিয়ামের বিধান দেওয়া হইল, যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববর্তীগণকে দেওয়া হইয়াছিল, যাহাতে তোমারা মুত্তাকী হইতে পার।’ -[বাকারা : ১৮৩] রমজান মাসের পুরো সময় রোজা রাখা ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভ বা মৌলিক ইবাদতের অন্যতম। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন: পাঁচটি স্তম্ভের উপর ইসলামের বুনিয়াদ স্থাপিত। এগুলো হলো- ১.ঈমান- আল্লাহ্ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহ’র

ধর্ম ও বিবেক: ইসলামী দৃষ্টিকোণ

Image
মুহাম্মদ আবুল হুসাইন: বিবেকের দোহাই দিয়ে দ্বীন-ধর্মকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার একটি প্রবণতা আধুনিক শিক্ষিত এক শ্রেণীর মানুষের মধ্যে লক্ষ করা যায়। তারা সেকুলার ও বস্তুবাদী জীবন-দর্শনের প্রচার এবং ধর্মমুক্ত জীবন-যাপনের নসীহত দিতে গিয়েই এমনটি করে থাকেন। তাদের মতে, মানুষের বিবেকই তার ধর্ম। বিবেকের কথা মত চলতে পারলে কোরআন কিতাবের প্রয়োজন পড়ে না। আপাত দৃষ্টিতে এ কথাগুলোর মধ্যে চটকদারিতা থাকলেও বস্তুনিষ্ঠতার দিক থেকে চিন্তা করলে তার অন্তঃসারশূন্যতা সহজেই ধরা পড়ে। বিবেকের বড়াই করে যারা দ্বীন-ধর্মকে বিসর্জন দিতে চান; তারা এর মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত যে বলগাহীন প্রবৃত্তির অনুরণকেই কবুল করে নেন তা হয়তো তারা নিজেরাও বুঝে উঠতে পারেন না। আসলে ধর্মহীন সেকুলার জীবন-দর্শনের অন্ধ অনুসরণকে বৈধতা দিতেই তারা এসব কথা বলে থাকেন। সহজ-সরল ও কোমলমতি তরুণদেরকে নাস্তিক্যবাদের দিকে ঠেলে দেয়ার এটি তাদের একটি বিশেষ কৌশল। আমরা মনে করি এটি শয়তানের একটি মারাত্মক কুমন্ত্রণা। শয়তানের বিশেষত্ব হল, যে যেমন তার কাছে সে বেশ ধরেই হাজির হওয়া। যারা বিবেকবোধকে লালন করেন তারা মানব সমাজের মধ্যে অপেক্ষাকৃত ভাল মানুষ। শয়তা

আল কোরআন : পরিবর্তনের চালিকা শক্তি

Image
মূল: ডঃ মাগদি আল হিলালি  অনুবাদ: মুহাম্মদ আবুল হুসাইন ‘রমজান সেই মাস, যে মাসে পবিত্র কোরআন নাযিল করা হয়েছে, যা সমগ্র মানবজাতির জন্য জীবন-যাপনের বিধান এবং সুস্পষ্ট উপদেশাবলীতে পরিপূর্ণ; যা সঠিক ও সত্যপথ প্রদর্শন করে এবং সত্য ও মিথ্যার মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য তুলে ধরে।’ -[আল বাকারা :১৮৫] পবিত্র কোরআনকে যারা বাস্তবিকই হেদায়াতগ্রন্থ এবং আত্মশুদ্ধিরউপায় হিসেবে গ্রহণ করে তাদের জীবনে আল কোরআন বিস্ময়কর পরিবর্তন সাধন করেথাকে। এ পরিবর্তন হয় বিরাট এবং মৌলিক। কোরআন তাদের চরিত্রের পুনর্গঠন করেএবং তাদেরকে নতুন ছাঁচে, নতুন রূপে গড়ে তোলে, যে রূপকে আল্লাহ্ খুবই পছন্দকরে থাকেন। কোরআনের এই প্রভাব সম্পর্কে কারো মনে যদি কোন সন্দেহ থেকে থাকে, তাহলে তিনি মহানবীর সাহাবীদের জীবনের দিকেই তাকিয়ে দেখতে পারেন যে তাদেরজীবনে কী বিরাট পরিবর্তন সাধিত হয়েছিল। ইসলামের আবির্ভাবের পূর্বেতাদের জীবন ছিল দারুন দুর্বিষহ এবং ঘোর অন্ধকার ও অজ্ঞতার মধ্যে নিমজ্জিত।কিন্তু কোরআনের স্পর্শ তাদের চরিত্রে কী পরিবর্তনটাই না ঘটিয়ে দিল! মূলতএর মাধ্যমে কোরআনের পরিবর্তন ও পুনর্গঠন ক্ষমতারই প্রমাণ পাওয়া যায়।কোরআনের কারণেই

আল কোরআন: রমজান মাসের বড়ত্বের গোপন রহস্য

Image
মূল: খুররম মুরাদ  অনুবাদ: মুহাম্মদ আবুল হুসাইন মাহে রমজানের বড়ত্ব ও গুরুত্বের গোপন রহস্য আমাদের জানতে হবে। এই পবিত্র মাসকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে কাজে লাগিয়ে আমরা আমাদের জীবনকে আলোকিত করতে চাই, সমৃদ্ধ করতে চাই। কিন্ত এই মাস নিজে কতটা আলোককে, কতটা সমৃদ্ধিকে ধারণ করে আছে বা কী কারণে এই মাস এতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে তা জানতে না পারলে এর যথাযথ গুরুত্ব যেমন আমরা উপলব্ধি করতে পারব না, তেমনি এ থেকে যথাযথ ফায়দা লাভের উদ্দেশ্য সাধনেও আমরা একনিষ্ঠ, দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ এবং স্থিরচিত্তও হতে পারব না। এই মাসের বড়ত্ব, গুরুত্ব ও মহত্বেও মূলে রয়েছে একটি বিষয়, আর তা হল আল্লাহ’র কালাম আল কোরআনের আত্মপ্রকাশ। এই মাসেই ক্বদরের রাত্রিতে সর্বপ্রথম লাওহে মাহফুজে সমগ্র আল কোরআন নাযিল এবং সংরক্ষণ করা হয়। তারপর এই মাসেই পৃথিবীতে হেরা গুহায় সর্বপ্রথম কোরআন নাযিল শুরু হয় এবং রাসূলের তেইশ বছরের নবুওয়তি জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রয়োজন অনুসারে অল্প অল্প করে সমগ্র কোরআন নাযিল সম্পন্ন হয়। অন্যকথায়, অত্যন্ত মেহেরবান ও অতিশয় দয়ালু আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীন এ মাসেই আমাদের মাঝে সর্বশেষ আসমানী কিতাব নাযিল করে মানবজাতির চূড়

রোজা কী, কেন, কীভাবে?

Image
মাওলানা মুজাম্মিল সিদ্দিকী  অনুবাদ: মুহাম্মদ আবুল হুসাইন রোজা কী? আল কোরআনের পরিভাষায় রোজাকে বলা হয়‘ সাওম’। আরবি ‘সাওম’ শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে ‘বিরত থাকা’। এ প্রসঙ্গে সূরা মরিয়মে উল্লেখিত হযরত ঈসা (আ.)’র মা  হযরত মরিয়মের একটি উক্তি এখানে উল্লেখ করা যায়: ‘আমি পরম করুণাময়ের জন্য রোজার মানত করেছি। এ কারণে আজ আমি কারও সাথে কথা বলব না।’ -সূরা মরিয়ম: আয়াত ২৬। এখানে মা মরিয়মের বক্তব্য থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, যেহেতু তিনি রোজা রেখেছেন, সেহেতু তিনি কারো সাথেই কথা বলা থেকে বিরত থাকবেন। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় ‘সাওম’ বলতে বুঝায়, ‘আল্লাহ’র সন্তুষ্টির আশায় সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার খাদ্য-পানীয় এবং যৌনতা থেকে বিরত থাকা। রোজা কেন রাখব? ১.রোজার উদ্দেশ্য পবিত্র কোরআন মজিদে রোজা বা সাওম সাধনার উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে : ‘হে ঈমানদারগণ, তোমাদের উপর রোজা ফরাজ করা হল যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর, যাতে তোমরা তাক্বওয়ার গুণাবলী অর্জন করতে পারো।’ -(সূরা আল বাকারা, আয়াত ১৮৩)। তাক্বওয়া আল কোরআনের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আধ্যাত্মিক এবং নৈতিক পরিভাষা। এটি ইসলাম