ক্যারিয়ার গাইড: টেলিসেলস এক্সিকিউটিভ/কাস্টমার সার্ভিস রিপ্রেজেন্টেটিভ বা গ্রাহকসেবা প্রতিনিধি
মুহাম্মদ আবুল হুসাইন:
টেলিফোনের মাধ্যমে পণ্য
বা
সেবা
বিক্রয় করাই হল টেলিসেলস এক্সিকিউটিভের প্রধান কাজ। এই কাজ কাস্টোমার সার্ভিস বা গ্রাহক সেবা নামেও অভিহিত করা হয়। ফোনে পণ্য বা সেবা ক্রেতাদের নিকট মূল্য সংযোজন সেবা বিক্রি করে রাজস্ব অর্জন
ও সংগ্রহ নিশ্চিত করা; কোম্পানির সেবা সম্পর্কে কর্পোরেট/ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ক্লায়েন্টদের সাথে যোগাযোগ করা এই পেশার লোকদের মূল কাজ। স্মার্ট, কর্মঠ ও জনসংযোগে দক্ষ প্রার্থীদের কাছে সব সময়ই আকর্ষণীয় পেশা কাস্টমার সার্ভিস বা কাস্টমার সাপোর্ট।
প্রধান দায়িত্ব এবং কর্তব্য:
- · সম্ভাব্য নেতৃত্বের কাছে টেলিফোন কল করুন
- · ক্লায়েন্টদের নিকট কোম্পানির অফার এবং পরিষেবাগুলো বিস্তারিতভাব্ উপস্থাপন করা
- · সম্পন্ন করা কল সমূহ এবং অর্জিত ফলাফল সমূহের সঠিক এবং বিস্তারিত রেকর্ড রাখা
- · যোগাযোগকৃত এবং সম্ভাব্য উভয় গ্রাহকদের জন্য ডেটাবেস (databases) Maintain করা।এ ক্ষেত্রে একটি উচ্চ মাত্রার নির্ভুল ডাটাবেইজের ব্যবস্থাপনা জানতে হবে।
- · দৈনিক ভিত্তিতে ব্যক্তিগত কর্মক্ষমতা(personal performance)উপলব্ধি এবং পরিচালনা করা।
- · নির্ধারিত (দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক) লক্ষ্যমাত্রা পূরণ।
- · কোম্পানীর লিখিত নির্দেশিকা এবং প্রস্তাবনা ব্যবহার করা।
- · কোম্পানির নিয়ম-পদ্ধতি (systems) সমূহ হালনাগাদ রাখা এবং রিপোর্ট তৈরি করা।
- · যখন কোন কাজ দেয়া হয় তা সময়মত শেষ করে উপস্থাপন করা
- · লক্ষ্য উন্নতকরণ এবং অতিক্রমের জন্য ধারবাহিকভাবে বিভিন্ন পন্থার অনুসন্ধান করা।
- · পৃথক ব্যক্তি, বিদ্যমান এবং সম্ভাব্য ক্লায়েন্টদের চিহ্নিতকরণ এবং যো্গাযোগ সাধন।
- · মুল ক্লায়েন্টদের সাথে সম্পর্কের উন্নয়ন এবং ব্যবস্থাপনা।
- · বিক্রয় সুযোগ বৃদ্ধির জন্য লীড গঠনে প্রতিক্রিয়া প্রদান।
- · বিক্রয় লক্ষ্য অর্জন এবং বিক্রয় পূর্বানুমান প্রস্তুতকরণ।
- · শিক্ষাগত যোগ্যতা- ন্যূনতম স্নাতক পাশ হতে হবে।
- · লিখিত, ভয়েস টেস্ট ও টাইপিং পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
- · শক্তিশালী যোগাযোগ দক্ষতা থাকতে হবে।
- · এক্সেল ব্যবহারে দক্ষতা থাকতে হবে।
- · লক্ষ্য(Target) চালিত এবং স্ব-প্রণোদিত হতে হবে।
- · পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের এবং ভাল বিশ্লেষণাত্মক দক্ষতা থাকতে হব্
- · টিম প্লেয়ার হতে হবে এবং স্বাধীনভাবে কাজ করতেও সক্ষম হতে হবে।
- বয়স ২৫ বছর অথবা এর নীচে
- মহিলারা অগ্রাধিকার পেয়ে থাকেন
- সৎ, স্মার্ট এবং পরিশ্রমী হতে হবে।
- আলোচনা দক্ষতা এবং ইংরেজীতে দক্ষ।
- গ্রাহকের সাথে দৃঢ় সম্পর্ক সৃষ্টি।
- চাপের মধ্যে কাজ করতে প্রস্তুত।
- পারফর্মেন্স বিশ্লেষন এবং ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কলের পারফর্মেন্স উন্নয়ন।
- ভালো কথোপথনসহ পারফর্মেন্স এর মূল্যায়ন করা।
আমাদের দেশে কাস্টমার সার্ভিস বা গ্রাহকসেবা প্রদান করার জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি গড়ে উঠেছে, যারা বিভিন্ন কোম্পানির হয়ে (তৃতীয় পক্ষ হিসেবে) গ্রাহক সেবা প্রদান করে থাকে।এমনই একটি কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান হলো ডিজিকন টেকনোলজিজ।এটি বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং
(বাক্য) কর্তৃক নিবন্ধিত একটি প্রতিষ্ঠান।
এই প্রতিষ্ঠানটি
২০১০ সাল থেকে প্রায় ২০টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে কাজ করছে। বিভিন্ন টেলিকম কোম্পানি, কনজিউমার, ব্যাংক, ইলেকট্রনিকস ও বিভিন্ন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি কাজ করছে। এছাড়া সরাসরিভাবেও বিভিন্ন কোম্পানি তাদের গ্রাহকদেরকে
উন্নত সেবা প্রদান করতে কাস্টমার সার্ভিস রিপ্রেজেনটেটিভ পদের জন্য তরুণদেরকে নিয়োগ দিচ্ছে।
এ পদে আবেদন করতে হলে প্রার্থীকে অবশ্যই স্নাতক বা সমমান পাস হতে হবে। বয়স হতে হবে ২১ থেকে ২৯ বছরের মধ্যে।এ প্রসঙ্গে ডিজিকন টেকনোলজিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা
পরিচালক ওয়াহিদ শরীফ বলেন, ‘আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠানে বেশির ভাগ তরুণদের অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি। বিশেষ করে সদ্য পাস করা স্নাতক ডিগ্রিধারী ছেলেমেয়েদের নিয়োগে প্রাধান্য দেওয়া হয়। আবেদনের নির্ধারিত তারিখ শেষে প্রার্থীদের আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই করে প্রার্থীদের
কয়েকটি ধাপে পরীক্ষা নেওয়া হয়। লিখিত, ভয়েস টেস্ট ও টাইপিং টেস্টের মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচন করা হবে।’ ওয়াহিদ শরিফ আরও বলেন, শুধু শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলে হবে না। থাকতে হবে বাড়তি কিছু যোগ্যতা। বাংলা ও ইংরেজিতে ভাষাজ্ঞান, পোশাক, আচরণ, শুদ্ধ উচ্চারণ, ভালো কণ্ঠস্বর ইত্যাদিসহ কম্পিউটার চালনায় মৌলিক জ্ঞান থাকতে হবে। নির্বাচিত প্রার্থীদের
কয়েকটি শিফটে প্রতিদিন আট ঘণ্টা করে কাজ করতে হবে। গ্রাহকদের ফোনের মাধ্যমে সঠিক তথ্য দিয়ে বিভিন্ন সেবা দেওয়াই কাস্টমার সার্ভিস রিপ্রেজেনটেটিভদের প্রধান কাজ।
নিয়োগ পাওয়ার পর একজন কাস্টমার সার্ভিস রিপ্রেজেনটেটিভ শুরুতে ৮ হাজার ৫০০ টাকা বেতন পান। প্রার্থীর দক্ষতা ও যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরির ছয় মাস পর আরও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হবে। অন্যান্য চাকরির মতো এখানেও অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতার মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়ে টিম লিডার, সিনিয়র টিম লিডার, সহকারী ব্যবস্থাপক ও ব্যবস্থাপক পর্যন্ত হওয়া যায় বলে জানান ওয়াহিদ শরীফ।
Comments
Post a Comment