সন্ত্রাসের পথ ইসলামের পথ নয়

মুহাম্মদ আবুল হুসাইন:



‘কেউ যদি অন্যায়ভাবে কোন মানুষকে হত্যা করে, তাহলে সে যেন পুরো মানব জাতিকেই হত্যা করিল। আর যে ব্যক্তি কাহারো রক্ষা করিল, সে যেন সমগ্র মানব জাতিরই প্রাণ রক্ষা করিল। ’-সূরা আল মায়েদা, আয়াত৩২।

ইসলামের যাবতীয় ব্যাপারে চূড়ান্ত মাপকাঠি হচ্ছেন আল্লাহ্ অর্থাৎ তাঁর কালাম আল কোরআন। আল্লাহ্র কালাম আল কোরআনের কোথাও আল্লাহ’র প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের জন্য মানুষকে বাধ্য করার কথা বলা হয়নি। বরং আল কোরআনের পরতে পরতে আল্লাহ’র অস্তিত্ব উপলব্ধির জন্য মানুষের বিবেকবোধকেই নারা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, সৃষ্টি সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনার আহবান জানানো হয়েছে; বলা হয়েছে সৃষ্টির মধ্যেই নিহিত রয়েছে স্রষ্টার নিদর্শন। স্রষ্টার অস্তিত্ব উপলব্ধির জন্য বিভিন্ন যুক্তি-প্রমাণও উপস্থাপন করা হয়েছে। মানুষের বিবেক ও চিন্তাশক্তিকে কাজে লাগানোর আহবানের মাধ্যমে মূলত মুক্তচিন্তা ও যুক্তিবাদকেই উৎসাহিত করা হয়েছে। এভাবে আল কোরআনের পরতে পরতে স্রষ্টার নিদর্শন তুলে ধরার পাশাপাশি বলা হয়েছে -

‘দ্বীন গ্রহণে জোর-জবরদস্তি নাই; সত্য পথ ভ্রান্ত পথ হইতে সুস্পষ্ট হইয়াছে। যে তাগূতকে অস্বীকার করিবে ও আল্লাহ’র উপর ঈমান আনিবে সে এমন এক মযবূত হাতল ধরিবে যাহা কখনও ভাঙ্গিবে না। আল্লাহ সর্বশ্রোতা, প্রজ্ঞাময়।’ -[আল-বাকারা : ২৫৬]

আর আল্লাহ্’র কালাম আল কোরআনকে মানার ক্ষেত্রে যথার্থ মডেল বা আদর্শ হচ্ছেন আল্লাহ্’র রাসূল। আল্লাহ্’র হুকুম ও রাসূলের আদর্শই হচ্ছে দ্বীনের যথার্থ ভিত্তি এবং ইসলামী আদর্শের চিরন্তন উৎস। আল্লাহ্’র আইন বা ইসলাম প্রতিষ্ঠার কাজ করতে হলেও তা কেবল আল্লাহ্’র কালামের দিক-নির্দেশনা ও রাসূলের দেখানো পথেই করা যেতে পারে। ইসলামের নামে নিজেদের খাম-খেয়ালীপনা কিংবা ইসলামের শিক্ষা ও আদর্শ-বিরোধী পন্থায় ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না এবং তা কখনো গ্রহণযোগ্যও নয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ্ রাব্বুল আ’লামীন অত্যন্ত সুষ্পষ্ট ভাষায় বলে দিয়েছেন : 

‘বল, তোমরা যদি আল্লাহ্কে ভালোবাসো তবে আমাকে অনুসরণ কর, তাহলে আল্লাহ্ তোমাদেরকে ভালোবাসিবেন এবং তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করিবেন। আল্লাহ্ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’-[আলে ইমরান : ৩১]
‘নিঃসন্দেহে রাসূলের জীবনে তোমাদের জন্য রহিয়ছে উত্তম আদর্শ। অবশ্য তাহাদের জন্য, যারা আল্লাহ্র সহিত সাক্ষাৎ ও পরকালীন মুক্তির ব্যাপারে আশাবাদী এবং যাহারা আল্লাহ্কে অধিক স্মরণ করে।’ -[আহযাব : ২১]


চরমপন্থা নয়, মধ্যপন্থাই ইসলামের আদর্শ; 

মানুষ হত্যা নয় বরং ইসলাম এসেছে মানবতার কল্যাণের জন্য
যারা ইসলাম প্রতিষ্ঠায় উগ্রবাদ বা চরমপন্থাকে আদর্শ হিসেবে বেছে নিয়েছেন তাদের জানা উচিত উগ্রবাদ বা চরমপন্থা নয় বরং মধ্যপন্থাই ইসলামের আদর্শ। আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীন স্বয়ং মুসলমানদেরকে একটি মধ্যপন্থী উম্মাহ বা জাতি হিসেবে উল্লেখ করেছেন; যে মুসলিম উম্মাহ হবে পৃথিবীতে সত্য, সুন্দর ও আদর্শের মডেল বা সাক্ষী; যে মুসলিম উম্মাহ’র কাজ হবে মানুষের কল্যাণ করা, তাদেরকে ধ্বংস করে দেয়া নয়। শুনুন আল্লাহ’র বাণী: 

‘এভাবে আমি তোমাদেরকে এক মধ্যপন্থী জাতিরূপে প্রতিষ্ঠিত করিয়াছি, যাহাতে তোমরা মানবজাতির জন্য সাক্ষীস্বরূপ হও আর রাসূল তোমাদের জন্য সাক্ষীস্বরূপ হইবে।’ -[সূরা বাকারা, আয়াত ১৪৩]

‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি। মানব জাতির কল্যাণের জন্যই তোমাদেরকে আবির্ভূত করা হইয়াছে। তোমরা মানুষকে সৎ কাজের নির্দেশ দান কর, অসৎকাজে নিষেধ কর এবং আল্লাহ’র উপর ঈমান রাখিয়া চল।’ -[আলে ইমরান : ১১০]

ইতিহাসও সাক্ষী দেয়, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) নিজের জীবনে কখনো কোন অসহিষ্ণুতা, উগ্রতা বা চরমপন্থাকে প্রশ্রয় দেননি। বরং আল্লাহ’র নির্দেশে তিনি সব সময়ই সহনশীলতা, উদারতা ও ভারসাম্যপূর্ণ জীবনাআদর্শ তথা মধ্যপন্থাকেই গ্রহণ করেছিলেন। তিনি ছিলেন মানব জাতির সামনে ইসলামী আদর্শের মূর্ত প্রতীক। তিনি ছিলেন সত্য ও সুন্দরের জীবন্ত নমুনা। আর তাঁর অনুরসরণ করে সাহাবীগণও হয়ে উঠেছিলেন মানবতার মূর্ত প্রতীক। আর এর মাধ্যমেই ইসলামের মহৎ আদর্শকে তারা মানব জাতির সামনে যথার্থরূপে, জীবন্তরূপে বা সত্যের সাক্ষী রূপে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছিলেন।  আর এ কারণেই আল্লাহ্ রাব্বুল আ’লামীন মুসলিম উম্মাহকে দিয়েছিলেন শ্রেষ্ঠ জাতির সনদ। আর সাথে সাথে সেই শ্রেষ্ঠত্ব যাতে তারা বজায় রাখতে পারে তার পথনির্দেশ বা হেদায়াতও তিনি দিয়ে দিয়েছেন। বলেছেন, ‘মানব জাতির কল্যাণের জন্যই তোমাদেরকে পৃথিবীতে আবির্ভূত করা হয়েছে।’ অর্থাৎ মুসলমানদের কাজই হবে মানুষের কল্যাণ করা। কীভাবে মানুষের কল্যাণ হয়- তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা, গবেষণা করা-এটিই হবে মুসলমানের মূল কাজ। আর মুসলমানরা যত বেশি মানবতার কল্যাণে এগিয়ে যেতে পারবে, এই কাজে জ্ঞান-গবেষণা ও বাস্তবায়নে যত এগিয়ে যেতে পারবে, ততই তারা পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে পারবে। আর কেবল মাত্র তখনই তারা মানব জাতিকে সৎ পথ প্রদর্শনের যোগ্যতা ও সক্ষমতা অর্জন করতে পারবে। অর্থাৎ সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করার যে দায়িত্বেও কথা পরবর্তী আয়াতে করা হয়েছে, তার জন্য উপযুক্ত ও গ্রহণযোগ্য হতে পারববে। অর্থাৎ ‘আদেশ ও নিষেধ’ করার জন্য যে অথরিটি (ধঁঃযড়ৎরঃু) বা কর্তৃত্ব লাভের জন্য যোগ্য বা ‘শ্রেষ্ঠ’ হওয়া হচ্ছে প্রথম শর্ত। কিন্ত এই শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের জন্য কোন ধরনের শক্তি বা ভয় বা নিষ্ঠুরতা প্রদর্শনের কিংবা বোমা মেরে মানুষ হত্যা করার বিন্দু মাত্র উল্লেখও কিন্ত এখানে করা হয়নি। বরং তার পরিবর্তে এখানে দেয়া হয়েছে মানবাতার কল্যাণ করার পথনির্দেশ। আর একথা বলাই বাহুল্য যে উগ্রতা, নিষ্ঠুরতা বা প্রতিহিংসার মাধ্যমে নয় বরং মানুষকে ভালোবেসে এবং তাদের প্রতি সহানুভূতি পোষণ করলেই কেবল তাদের জন্য কল্যাণকর কাজ করা যায়।

মানবতা অখণ্ড: ধর্ম, বর্ণ বা জাতি-বিদ্বেষ কাম্য নয়
ইসলাম মানুষের মধ্যে ধর্ম-বর্ণ-গোত্র-জাতি-গোষ্ঠীগত কারণে কিংবা কোন আঞ্চলিকতার কারণেও মানুষে মানুষে ভেদাভেদ, পার্থক্য ও বৈষম্য ও বিদ্বেষ অনুমোদন করে না। বরং ইসলাম বিশ্বের সকল মানুষকে এক আদি পিতা-মাতার সন্তান  এবং বিশ্বের সকল মানুষকে একটি অখ- জাতি মনে করে। এই অখ- মানবতাবোধ ও ভ্রাতৃত্বের ভিত্তিতেই ইসলাম একটি বিশ্বসমাজ ও বিশ্বরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়। দেশ, কাল, ভাষা, অঞ্চল বা ভৌগলিক প্রভাবে মানুষের মধ্যে গড়ে ওঠা ঐতিহ্য ও স্বাতন্ত্র্যকে ইসলাম বৈচিত্র হিসেবেই গ্রহণ করে। আল্লাহ্ বলেন :

‘হে মানুষ! আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করিয়াছি একজন পুরষ ও একজন নারী হইতে, পরে তোমাদেরকে বিভক্ত করিয়াছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাহাতে তোমরা একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হইতে পার। তোমাদের মধ্যে আল্লাহ’র নিকট সেই ব্যক্তিই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন যে আল্লাহকে অধিক ভয় করে। নিশ্চয়ই আল্লাহ সকল কিছু জানেন, সমস্ত খবর রাখেন।’Ñ[সূরা আল হুজরাত : ১৩]

ইসলাম প্রতিষ্ঠায় জবরদস্তি কাম্য নয়
রাসূলের জীবনাদর্শের দিকে তাকালে আমরা দেখব, তিনি ইসলাম কায়েমের জন্য কোন নেতিবাচক পথ কিংবা চরমপন্থাকে গ্রহণ করেননি। বরং তাঁর পথ ছিল দাওয়াতের পথ। অর্থাৎ ইতিবাচক পন্থায় ইসলামের শিক্ষাাকে তিনি মানুষের সামনে তুলে ধরেছিলেন। আল্লাহ্র বিধান অনুসরণের গুরুত্ব ও সুফল তিনি মানুষের সামনে তুলে ধরেছিলেন এবং পাশাপাশি ঐশী হেদায়াত প্রত্যাখ্যানের পরিণাম সম্পর্কেও তিনি মানুষকে সতর্ক করে দিতেন। কিন্তু সত্যের আদর্শ ইসলামকে গ্রহণ করার জন্য তিনি কখনো মানুষকে বাধ্য করেননি। জোর করে আল্লাহ্র বিধান মানব সমাজে চাপিয়ে দেননি কিংবা চরমপন্থায় ইসলামী শাসন কায়েম করেননি। এটা আল্লাহ্রই নির্দেশ ছিল যে, তিনি তাঁর নবীকে ‘দারোগা’ করে পাঠাননি। কারণ আল্লাহ্র নেয়ামত অপাত্রে দেয়ার মত বিষয় ছিল না। যে জাতি আল্লাহ্র হেদায়াত গ্রহণ করতে প্রস্তুত নয়, আল্লাহ্ জোর করে তাদের উপর তা চাপিয়ে দিতে চান না। অবশ্য যারা আল্লাহ্র কালামকে গ্রহণ করতে আগ্রহী হয় তাদেরকেই তিনি এ নেয়ামতের সুফল ভোগ করার সুযোগ প্রদান করেন। এ কারণে ইসলামী সমাজ কায়েমের ক্ষেত্রে জনমতটি ছিল সব সময়ই প্রধান বিবেচ্য বিষয়। গণমত ইসলামের অনুকূল হলেই কেবল ইসলাম কায়েম সম্ভব হয়েছে, আর যেখানে জনমত ইসলামের প্রতিকূলে ছিল, সেখানে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়নি।

আমরা জানি, মহানবীর জীবনকালের ছিল দুটি প্রধান অধ্যায়। এর একটি হল মাক্কী যুগ, অন্যটি মাদানী যুগ। আমরা দেখেছি মাক্কী যুগে আল্লাহ্র রাসূল দীর্ঘ তেরটি বছর মক্কাবাসীকে দ্বীনের দাওয়াত দিয়েছেন। কিন্তু মক্কার অধিকাংশ লোক ছিল রাসূলের দাওয়াতের ঘোর বিরোধী। তারা ইসলামের সুমহান আদর্শকে গ্রহণ করেনি। আল্লাহ্র কর্তৃত্ব ও রাসূলের নেতৃত্ব গ্রহণ করার জন্য তারা মোটেই প্রস্তুত ছিল না। তারা আল্লাহ্র রাসূলের দাওয়াতকে ব্যাহত করার জন্য নানা ভাবে চক্রান্ত করেছে, শক্তি প্রয়োগ করেছে, নির্যাতন করেছে, রক্ত ঝরিয়েছে এমনকি শেষ পর্যন্ত তারা মহানবীকে হত্যা করারও চেষ্টা করেছে। যার কারণে আল্লাহ্র রাসূল ও তাঁর সঙ্গী-সাথীদের হিযরত করতে হয়েছে এবং মক্কায় ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়নি। কিন্তু তা সত্বেও তিনি কি মক্কার কুরাইশদের বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত হয়ে কোন সন্ত্রাসবাদী কর্মকা- পরিচালনা করেছিলেন? ইতিহাস কিন্তু তা বলে না। বরং ইতিহাস বলে- আল্লাহ্র রাসূল এবং তাঁর সাহাবীগণ অপরিসীম ধৈর্য্য ধারণ করে কুরাইশদের শত অত্যাচার-নির্যাতনকে সহ্য করেছেন এবং কোন ধরনের প্রতিশোধ না নিয়ে আল্লাহ্র নির্দেশে নিরবে হিযরত করেছিলেন।

অন্যদিকে মদীনার লোকেরা ইসলামের আহবানে ব্যাপকভাবে সাড়া দিয়েছিল। তারা মহানবীকে মদীনায় আমন্ত্রণ জানায় এবং সাদরে বরণ করে নেয়। তাঁরা শুধু যে মহানবীর নেতৃত্বকে গ্রহণ করে তাঁর আনুগত্য করার শপথ (বায়াত) করেছিলেন তাই নয়, ঘোষণা করেছিলেন, ‘হে রাসূল আপনি যদি আমাদেরকে আগুনে ঝাঁপিয়ে পড়তে নির্দেশ দেন, তাহলে আমরা তাই করব।’-[আসহাবে রাসূলের জীবনকথা-মুহাম্মদঅ আব্দুল মা’বুদ] যার কারণে মদীনায় গড়ে উঠেছিল ইসলামী সমাজ এবং কালক্রমে তা পরিণত হয় বিশাল ইসলামী খেলাফতের মূল কেন্দ্রে।

মূলত ইসলামী সমাজ-বিপ্লবের ক্ষেত্রে জনমত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জনমতকে উপেক্ষা করে ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার কোন সুযোগ নেই। মক্কায় ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য অনুকূল জনমত ছিল না বলেই সেখানে তখন ইসলাম প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়নি এবং মদীনার জনমত ইসলামের পক্ষে অনুকুল ছিল বলেই সেখানে ইসলাম প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়েছিল - এ ইতিহাস তো অস্বীকার করার উপায় নেই। এখানে সন্ত্রাসবাদ বা চরমপন্থার কোন নজির খুঁজে পাওয়া যাবে না।

বরং আমরা দেখেছি, তায়েফের লোকেরা আলাহর রাসূলের দাওয়াতকে প্রত্যাক্ষাণ করে তাঁকে চরমভাবে অপমাণ ও শারীরিক নির্যাতন করে তাড়িয়ে দিয়েছিল, তাঁর সারা শরীর যখন রক্তরঞ্জিত হয়েছিল এবং মাটির উপর যখন তিনি বেহুশ হয়ে পড়েছিলেন। এমন অত্যাচারের মুখেও তিনি তাদের বিরুদ্ধে বদদোয়াটুকু পর্যন্ত করেননি। এমনকি, রাসূলের প্রতি এই অত্যাচার দেখে তাঁর সাথীরা ঐ বর্বর, ইতর লোকদের অভিশাপ দেয়ার জন্য রাসূলকে অনুরোধ জানালে তিনি যে জ্যোতির্ময় মন্তব্য করেছিলেন তা আজও বিবেকবান মানুষকে অভিভুত করে। আল্লাহ্র রাসূল দুশমনদের প্রতি অভিশাপ দেয়ার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে বললেন, ‘আমাকে অভিশাপ দেয়ার জন্য পাঠানো হয়নি।’ শুধু তাই নয়, পরম মমতায় তাদের হেদায়েতের জন্য তিনি আলাহর দরবারে দু হাত তুলে দোয়া করেছিলেন, তাদের কল্যাণ কামনা করেছেন। সুবহানালাহ! এই তো ইসলাম। অথচ এই ইসলামই আজ দাঁড়িয়ে আছে সন্ত্রাসবাদ, উগ্রবাদ আর চরমপন্থার অপবাদ, অপমান মাথায় নিয়ে বিশ্ব সভ্যতার কাঠগড়ায়! আমাদের চৈতন্যহীনতা ও অজ্ঞানতা যে আজ কোথায় গিয়ে ঠেকেছে তা ভাবতেও কষ্ট হয়।
চলবে-

Comments

Popular posts from this blog

ক্যারিয়ার গাইড: টেলিসেলস এক্সিকিউটিভ/কাস্টমার সার্ভিস রিপ্রেজেন্টেটিভ বা গ্রাহকসেবা প্রতিনিধি

যৌবনের যত্ন [চার]: পুরুষ হরমোন ঘাটতির ১০টি লক্ষণ

ডাটা এন্ট্রি: কর্মসংস্থানের সহজ মাধ্যম